যেসব স্থানে করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ ছড়ানোর ঝুঁকি আছে সেসব জায়গায় এখন থেকে সকল সাধারণ মানুষকেই মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’।
সম্প্রতি তারা করোনাভাইরাস গাইডলাইনে মাস্কের ব্যাপারটা যুক্ত করেছেন। এর আগে বলা হয়েছিল শুধুমাত্র সংক্রমিত রোগীদের মাস্ক পরলেই হবে। তবে এবার অনেক দেশে লকডাউন শিথিল হওয়ার পর করোনা সতর্কতার পরিমাণটা বাড়িয়ে নেয়ার পরামর্শ দিলো সংস্থাটি।
সাম্প্রতিক সময় গুলোতে করা বিভিন্ন গবেষণার ফলাফল বিশ্লেষণের পরই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। নানান গবেষণায় দেখা গেছে যেসব জায়গায় জনসমাগমের মাত্রা বেশি সেসব জায়গায় আগের নিয়মে অর্থাৎ কেবলমাত্র সংক্রমিত রোগীরাই মাস্ক পরবে এমনটা হলে সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যায়। তাই এখন থেকে সংক্রমিত এবং সংক্রমিত নয় উভয়কেই ফেস মাস্ক পরার পরামর্শ সংস্থাটির।
আরো পড়ুনঃ ট্রাম্পের সম্পর্ক ছিন্ন ঘোষণার পর WHO এর সবথেকে বড় দাতা এখন গেটস ফাউন্ডেশন
সংস্থাটির প্রধান ট্রেডোস আধানম বলেন, “নতুন প্রমাণের আলোকে, ডব্লিউএইচও সরকার গুলোকে পরামর্শ দিচ্ছে যে এখন থেকে সকল সাধারণ মানুষকেও মাস্ক পরতে উৎসাহিত করতে হবে। যেসব জায়গায় জনসমাগম হয় এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন যেমন গণ পরিবহন, দোকান সমূহ অথবা জনবহুল পরিবেশে সেসব জায়গায় অবশ্যই সকলকে মাস্ক পরতে হবে।”
তবে উদ্বেগের বিষয়টি এখনও অব্যাহত রয়েছে যে মাস্কগুলি নিজেরাই ঝুঁকির কারণ হতে পারে – কেননা এতে লোকজন নিজেকে নিরাপদ মনে করতে পারে এবং সামাজিক দূরত্ব ও হাত ধোওয়ার মতো অন্যান্য সতর্কতা ব্যবস্থা গুলো নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা কম মনে করতে পারে।
ট্রেডোস আধানম আরো বলেন, এসব ছাড়াও কিভাবে মাস্ক সঠিক ও নিরাপদ ভাবে ব্যবহার করা যাবে তা আমাদের গাইডলাইনে বিস্তারিত জানা যাবে। মাস্ক ব্যবহার করলেও হাত না ধুয়েই বারবার হাত দিয়ে মাস্ক এডজাস্ট করা বা বার বার মাস্ক খোলা এবং পরা এরকম চালিয়ে গেলে মানুষ খুব সহজেই নিজেদেরকে সংক্রমিত করতে পারে।
“তবে ফেস মাস্ক গুলি সুরক্ষার ক্ষেত্রে মানুষের মাঝে ভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। এক্ষেত্রে তারা হাত ধোয়া এবং শারীরিক দূরত্ব রাখার মত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলি অবহেলা করতে পারে।
“আমি এটা নিশ্চিত ভাবে বলতে পারছি না: শুধুমাত্র মাস্ক আপনাকে কোভিড-১৯ থেকে রক্ষা করতে পারবে না।”
যুক্তরাজ্যে গণপরিবহণে ফেস মাস্ক আবশ্যক এমন আইন জারির পরের দিনই ডব্লিউএইচও এমন একটি সচেতনতামূলক ঘোষণা দিলো।
সংস্থাটির কোভিড-১৯ বিষয়ক টেকনিক্যাল লিড বিশেষজ্ঞ মারিয়া ভ্যান কেরখোভ বলেন, “আমরা সরকারগুলিকে পরামর্শ দিচ্ছি সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরতে উৎসাহিত করার জন্য। এবং আমরা একটা বিশেষ ফ্যাব্রিক মাস্ক এর কথা উল্লেখ করছি যেটা একটা নন-মেডিকেল মাস্ক।”
আরো পড়ুনঃ MI6 এর প্রাক্তন প্রধানের দাবি করোনাভাইরাস চীনের পরীক্ষাগার থেকেই ছড়িয়েছিল
তিনি আরো যোগ করে বলেন, “আমাদের কাছে এখন প্রমাণ আছে যে যদি এটা সঠিকভাবে করা সম্ভব হয় তাহলে এটি ভাইরাসটির সংক্রমণের একটা বড় বাধা হতে পারবে।”
তিনি আরো জানান, জাতিসংঘের এই সংস্থাটি বলছে যে যেসব স্বাস্থ্যকর্মী এবং ফ্রন্ট লাইনার যারা কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে সরাসরি লড়ছেন অথবা যাদের কাছে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ দেখা গেছে তাদের মেডিকেল মাস্ক পরা উচিত।
তবে ক্লিনিক, হাসপাতাল, কেয়ার হোমস এবং দীর্ঘমেয়াদী আবাসিক স্থানগুলোতে কোনও রোগী বা বাসিন্দাদের সংস্পর্শে আসা কর্মীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে তাদেরকে অবশ্যই সবসময় মাস্ক পরে থাকতে হবে।