আবারও সন্ত্রাসী হামলার শিকার হলো পাকিস্তান ক্রিকেট। করোনাভাইরাস লকডাউন শিথিলের পর খেলাধুলা চালু হলেও, ক্রিকেট মাঠে খেলার মাঝেই সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলি সব যেন আবারও ওলটপালট করে দিলো।
২০০৯ সালের সেই ঘটনা এখনও ভুলতে পারেনি ক্রিকেট বিশ্ব। পাকিস্তানের লাহোরের গদ্দাফি স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের উপর জঙ্গি হামলা হয়েছিল।
সেই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন অনেকেই। কোনোমতে সেবার প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররা। তবে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের অনেকেই গুরুতর আহত হয়েছিলেন।
পাকিস্তান ক্রিকেটের ইতিহাসে সেই ন্যাক্কারজনক ঘটনার পর পাকিস্তানকে কার্যত একঘরে করে দিয়েছিল ক্রিকেট বিশ্ব। এরপর থেকে এখনও পাকিস্তানের মাটিতে স্বাভাবিক হয়নি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। সেই ঘটনার পরে প্রায় দশ বছরে কোনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ম্যাচ হয়নি।
তবু গত কয়েকবছরে বেশ গুছিয়ে এনেছিল দেশটির ক্রিকেট বোর্ড ও দেশটির সরকার। শেষ পর্যন্ত ২০১৯ সালে আবারও পাকিস্তানে যেতে রাজি হয়েছিল শ্রীলঙ্কা। সেই পাকিস্তানে আবার ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালীন হামলা চালাল জঙ্গিরা। এরই মধ্যে এলো আরেকটি সন্ত্রাসী হামলার খবর।
তবে এবার কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ নয়। গত বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের কোহাট বিভাগের ওরাকজাই জেলার দ্রাদার মামাজাই অঞ্চলে অমন ক্রিকেট টুর্নামেন্ট এর ফাইনাল খেলা চলাকালীন সময়ে এলোপাতাড়ি গুলি করেছে সন্ত্রাসীরা।
আচমকা এমন সন্ত্রাসী হামলায় দিশেহারা হয়ে পড়েন খেলোয়াড় ও দর্শকরা। তবে সৌভাগ্যবশত মাঠে থাকা কারও তেমন কোন ক্ষতি হয়নি।
এই হামলার কারণে তখনই বন্ধ করে দেয়া হয় ম্যাচটি। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছে, অমন ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচটি দেখতে সাংবাদিক থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বসহ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে দর্শক উপস্থিত ছিলো স্টেডিয়ামে। কিন্তু ম্যাচ শুরু হতেই নিকটবর্তী এক পাহাড় থেকে সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে।
কোনোমতে পালিয়ে নিজেদের জীবন রক্ষা করেছেন সেখানে উপস্থিত থাকা খেলোয়াড়, দর্শক এবং সাংবাদিকরা। গুলির তোড় এতোই বেশি ছিল যে ম্যাচটি পুনরায় শুরুর কথা ভাবতেও পারেনি আয়োজকরা। তবে এ ঘটনায় মাঠের কেউ হতাহত হয়নি।
এদিকে ওরাকজাই জেলার পুলিশ কর্মকর্তা নিসার আহমাদ জানিয়েছেন, ওই পাহাড়ি অঞ্চলে সন্ত্রাসীদের লুকিয়ে থাকার খবর আগেই ছিল তাদের। তিনি জানান, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ওরকজাই স্কাউটস ও ফ্রন্টিয়ারের সাথে যৌথভাবে অভিযান চালাবে পুলিশ।