বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে করোনা ভাইরাস৷ বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। এই ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে নানান বিধিনিষেধ সহ পড়েছে লকডাউনও। যার দরুণ বদলে ফেলতে হয়েছে জীবনযাত্রা। এবার জীবনযাত্রার পরিবর্তন নিয়ে ২৫ টি রাজ্যের ওপর গবেষণা করতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য খুঁজে পেয়েছে ভারতের AIIMS.
তাদের নতুন গবেষণায় দেখা গেছে আক্ষরিক অর্থেই ঘুম কেড়েছে করোনা ভাইরাস। করোনা ঠেকাতে ঘোষিত লকডাউনই নাকি এর কারণ!
আগে আপনি কতক্ষণ ঘুমাতেন? লকডাউনে বেশি নাকি কম ঘুমাচ্ছেন? খেয়াল করেছেন কখনও?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার এই লকডাউন মানুষের ঘুমের উপরে বেশ বড়সড় প্রভাব ফেলেছে। গবেষণার তথ্যেও উঠে এসেছে এরকম তথ্য।
আমাদের মাঝে কেউ কেউ ঘুমোতে যান ঘড়ি ধরে। আবার কেউ জাগেন সারারাত। করোনা সংকট অবশ্য বদলে দিয়েছে প্রায় সবারই ঘুমের ধরণ। লকডাউনে যেন অনেকেরই ঘুমই লকডাউন।
ডাক্তাররা বলেন, প্রত্যেক মানুষেরই পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন। কিন্তু এই পর্যাপ্ত সময়টা কত?
উত্তরাখণ্ডের ঋষিকেশ AIIMS-এর সাইকিয়াট্রি ও স্লিপ মেডিসিন বিভাগ ভারতের ২৫টি রাজ্যের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলির সহযোগিতায় এই গবেষণা করে।
সোশাল মিডিয়া ও অনলাইনের মাধ্যমে করা এই গবেষণায় দেখা গেছে, লকডাউনের আগে রাত ১১ টার পরে ঘুমোতেন ৪৮.৪% মানুষ৷ কিন্তু লকডাউনের পরে ঘটনাটা বদলে গেছে। এ সময় রাত ১১ টার পরে ঘুমোচ্ছেন ৬৫.২% লোক।
যখন লকডাউন ছিল না তখন রাত ১১টার আগে ঘুমিয়ে পড়তেন ৫১.৬ % মানুষ৷ কিন্তু লকডাউনের পর রাত ১১টার আগে মাচ্ছেন মাত্র ৩৪.৮ শতাংশ লোক৷ অর্থাৎ, লকডাউনের ফলে বেশি রাত করে ঘুমাতে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে।
আরো পড়ুনঃ লকডাউনে অতিরিক্ত ঘুম করতে পারে মহাক্ষতি! জানুন ঠিক কতটা ঘুম প্রয়োজন
লকডাউনের আগে ঘুমোতে গড়ে ১ ঘণ্টার বেশি সময় লাগত মাত্র ৩.৮% লোকের৷ কিন্তু লকডাউনের পরে ঘুমোতে গড়ে ১ ঘণ্টার বেশি সময় লাগছে ১৬.৯৯ শতাংশ লোকের৷
লকডাউনের আগে দিনের বেলায় ৬০ মিনিটের কম ঘুম মাত্র ৩১.১ শতাংশের হলেও তা লকডাউনের পরে এসে বেড়েছে ৩৮ শতাংশে। অর্থাৎ দিনের বেলায় বেশি ঘুমাচ্ছে মানুষজন।
এদিকে ঘুমানোর পরের প্রশান্তির ব্যাপারটিও লক্ষ্যণীয়। লকডাউনে নাকি অনেকেই ঘুমিয়েও সে ভাবে তরতাজা হচ্ছেন না। লকডাউনের আগে ঘুমিয়ে তরতাজা লাগত ৭০%-এর৷ কিন্তু লকডাউনের পরে ঘুমিয়ে তরতাজা লাগছে মাত্র ৫৫% মানুষের৷
লকডাউনের ফলে সারা দিনই কেটে যাচ্ছে ঘরে বসে। শারীরিক পরিশ্রম প্রায় হচ্ছে না বললেই চলে। সে কারণেই অনেকের ঘুম ছুটেছে বলে মনে করছেন গবেষকরা।