নোভেল করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তিদের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ার সাথে সাথে পৃথিবীজুড়ে বড় বড় ঔষুধ কোম্পানিগুলোও কোভিড-১৯ এর প্রতিষেধক আবিষ্কারের জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ভারতীয় কোম্পানিগুলোও সেই দলে নাম লিখিয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী মোট ৬ টি ভারতীয় কোম্পানি কোভিড-১৯ প্রতিষেধক আবিষ্কারের জন্য কাজ করে চলেছে।
করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য ভারতীয় বিজ্ঞানীরাও এখন বিশ্বের একটি অংশ হয়ে উঠেছেন।
ফরিদাবাদের ট্রান্সলেশনাল স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইন্সটিটিউট এর নির্বাহী পরিচালক গগণদ্বীপ কাঙ পিটিআইকে বলেন, “জাইডাস কাডিলা এই মুহূর্তে দুটি প্রতিষেধক নিয়ে কাজ করছে। অন্যদিকে সেরাম ইন্সটিটিউট, বায়োলজিক্যাল ই, ভারত বায়োটেক, ইন্ডিয়ান ইমিউনোলজিক্যালস এবং মিনব্যাকস এরা প্রত্যেকে একটি করে প্রতিষেধক নিয়ে কাজ করছে।”
মহামারী প্রস্তুতিতে মহাজোট উদ্ভাবন সংস্থা CEPI এর একটি গবেষণায়ও এই প্রতিষেধক গুলির দ্রুত উন্নয়ন নিয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সমীক্ষায় বলা হয়েছে ‘কোভিড-১৯ মহামারীর জন্য বৈশ্বিক প্রতিষেধক আরএন্ডডি’র গতিময় প্রচেষ্টা নজিরবিহীন।’ উল্লেখ্য, গগনদ্বীপ হলেন CEPI এর ভাইস চেয়ারম্যান।
তবে গবেষণাটিতে কোনো প্রতিষেধক এখনো শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে ইঙ্গিত করা হয়নি। যেহেতু প্রতিষেধক তৈরি একটি দীর্ঘকালীন বাৎসরিক প্রক্রিয়া, তাই কোভিড-১৯ এর প্রতিষেধক চটজলদি পেতে গেলেও কমপক্ষে এক-দুই বছর অপেক্ষা করতে হবে।
প্রথমে প্রতিষেধকটির উন্নয়ন করতে হবে, এরপর এটি যে সুরক্ষিত এবং কার্যকরী তা পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণ করে দেখাতে হবে। এজন্য পর্যায়ক্রমে পশু এবং মানুষ উভয়ের উপর পরীক্ষা করতে হবে। এবং সর্বশেষ যদি সরকার এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদন দেয় তবেই তা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া যাবে।
কোভিড-১৯ এর প্রতিষেধক তৈরিতে বিজ্ঞানীদের যেটি সাহায্য করছে তা হল ভাইরাসটির জেনেটিক মেটেরিয়াল গঠন, যেটি অনেকটা সেভেয়ার একিউট রেসপাইরেটরি সিনড্রোম (SARS) এবং মিডল ইস্ট রেসপাইরেটরি সিনড্রোম (MERS) এর অনুরূপ। এরফলে বিজ্ঞানীরা পূর্বের এই ভাইরাসগুলোর উপর করা কাজ নিয়ে নোভেল করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরিতে উন্নয়ন করতে সক্ষম হচ্ছে।
সারাবিশ্বে মোট ৭০ টি প্রতিষেধক নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। যারমধ্যে ৩ টি প্রতিষেধক ইতিমধ্যে মানুষের উপর পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। মানুষের উপর বিভিন্ন পর্যায়ে (ব্যবহারের স্কেলের উপর ভিত্তি করে) পরীক্ষা করা থেকে এখন নির্ধারণ করা হবে যে এই প্রতিষেধক গুলো আসলেই কার্যকরী কিনা।
মজার ব্যাপার হচ্ছে গগনদ্বীপ কর্তৃক উল্লেখিত ৬ টি কোম্পানির কোনোটিই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’ কর্তৃক স্বীকৃত নয়। ভারত থেকে হু শুধুমাত্র জাইডাস ক্যাডিলা এবং সেরাম ইন্সটিটিউট -কে কোভিড-১৯ এর প্রতিষেধক নিয়ে কাজ করা বৈশ্বিক সংস্থাগুলোর অংশ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
নিউজ সোর্সঃ PTI
Comments ৩