এই একবিংশ শতাব্দীতে স্ক্রিন নির্ভরতা ব্যাধি কিন্তু সত্য এবং আপনার অজান্তে এটি আপনার সন্তানের মস্তিষ্কের ক্ষতি করছে!
এখন, আপনি আপনার ছোট বাচ্চাদের জন্য স্ক্রিন সময় সীমাবদ্ধ করার জন্য অন্য একটি বৈধ কারণ পেয়েছেন। নতুন একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, দীর্ঘক্ষণ মোবাইল স্ক্রিন ব্যবহার আপনার সন্তানের মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করতে পারে। এটি এমন একটি ব্যাধি হতে পারে যা স্ক্রিন নির্ভরতা ডিসঅর্ডার (SDD) হিসাবেও পরিচিত। মনোবিজ্ঞানীরা প্রকাশ করেছেন যে এসডিডি এর প্রভাবগুলি আপনার সন্তানের পক্ষে যখেষ্ট খারাপ এবং এক্ষেত্রে আপনার সন্তান ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস, মাথা ব্যথা, অনিদ্রা এবং দুর্বল পুষ্টি অনুভব করতে পারে।
স্ক্রিন নির্ভরতার প্রভাব
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করা ছাড়াও এসডিডির আরও বেশ কয়েকটি সংবেদনশীল প্রভাব রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে উদ্বেগ, অপরাধবোধ, একাকীত্ব এমনকি অসততাও। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা প্রমাণ পেয়েছেন যে, এই আসক্তিটি ইন্টারনেট আসক্তি ডিসঅর্ডার এর সাথে কিছুটা মিল।
আচরণগত প্রভাব
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এসডিডি আপনার বাচ্চার মস্তিষ্কের ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখে। এক্ষেত্রে আপনি আপনার সন্তানের কিছু আচরণগত পরিবর্তনও অনুভব করতে পারেন। স্ক্রিন আসক্ত শিশুরা সমস্যাযুক্ত আচরণ দেখাতে পারে, প্রত্যাহারের লক্ষণগুলি দেখাতে পারে, বাইরের ক্রিয়াকলাপগুলিতে আগ্রহ না দেখানো এবং মোবাইল ব্যবহারের সময়কাল সম্পর্কে মিথ্যা বলা এর অন্তর্ভুক্ত। এই সমস্ত বিপত্তি সত্ত্বেও, বাচ্চারা তার ব্যবহার চালিয়ে যেতে পারে। বিজ্ঞানীদের মতামত, যারা এসডিডি আক্রান্ত তাদের “মস্তিস্কে ধূসর এবং সাদা উভয় পদার্থের মাইক্রোস্ট্রাকচারাল এবং ভলিউম্যাট্রিক পার্থক্য বা অস্বাভাবিকতা রয়েছে।”
আপনার কি লক্ষ্য করা উচিত
আপনাকে অবশ্যই আপনার সন্তানের ক্রিয়াকলাপের উপর নজর রাখা উচিত। আপনার শিশু যখন নিয়মিত ক্রিয়াকলাপ বা কাজ সম্পাদন করতে সক্ষম না হয়, তখন একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আপনার সন্তানের আচরণ পর্যবেক্ষণ করুন এবং যদি প্রয়োজন হয় তবে আপনার শিশুকে মোবাইলের আসক্তি থেকে মুক্ত করার জন্য কোনো স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাথে এটি নিয়ে আলোচনা করুন।
আপনার বাচ্চাদের কতটা পর্দার ব্যবহারের সময় দেওয়া উচিত?
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, যে শিশুরা ১৮ মাসের চেয়ে কম বয়সী তাদের মোবাইলের ব্যবহার কঠোরভাবে বিধিনিষেধ করা উচিত। বয়স্ক বাচ্চাদের জন্য যাদের বয়স ২ বছরের নীচে, তাদের জন্য একটু স্ক্রিন সময় দেওয়া উচিত। যেসকল বাচ্চারা, ২ থেকে ৫ বছর বয়সের মধ্যে তাদের এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে পর্দার ব্যবহার বা দেখার সময় দেওয়া উচিত নয়।
বিশেষজ্ঞরা স্কুল-বয়সী বাচ্চাদের এক থেকে দুই ঘন্টার জন্য স্ক্রিন সময় দেওয়ার পরামর্শ দেন, তবে তাও অভিভাবকদের তত্ত্বাবধানে। আপনার শিশুটি মাঝারিভাবে মোবাইল স্ক্রিন ব্যবহার করছে এবং আপনার বাচ্চাটিতে কোনও বিস্ময়কর পরিবর্তন লক্ষ্য করা থাকলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
বিশেষজ্ঞরা যা বলেন
গ্যাজেট এবং প্রযুক্তি খারাপ কিছু নয়। মোবাইল ডিভাইস এবং অন্যান্য গ্যাজেটগুলি যোগাযোগ, শেখার এবং গবেষণার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে এগুলি যথাযথ পদ্ধতিতে ব্যবহার করা উচিত। আপনার বাচ্চাদের ডিভাইসের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে বলুন এবং নিশ্চিত করুন যে আপনার শিশুরা সেগুলি যেন সংযত ভাবে ব্যবহার করে।
আরো পড়ুনঃ