করোনা মহামারি তাণ্ডবে বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। একমাত্র ভ্যাকসিনই পারবে এই বিপর্যয় থেকে বিশ্ববাসীকে মুক্ত করতে। তাই ভ্যাকসিনের আশাতেই বিজ্ঞানীদের দিকে তাকিয়ে আছে গোটা বিশ্বের মানুষ। এরই মাঝে সুখবর দিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রীর দাবি, রাশিয়ার হাত ধরেই বিশ্বের প্রথম কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন আসছে আগামী ১২ আগস্ট।
আর মাত্র চারদিন পর এই ভ্যাকসিন এনে পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিতে চান রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা।
নভেল করোনা ভাইরাসের একটি ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের সবগুলো ধাপই ইতোমধ্যে সফলভাবে শেষ হয়েছে বলে দাবি করেছে রাশিয়ার সেকেনভ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক।
এর আগে তারা জানিয়েছিলেন, আগামী ১২ থেকে ১৪ আগস্টের মধ্যেই তাদের উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন বাজারে আসবে। আর এখন নিশ্চিত করা হয়েছে যে, আগামী ১২ আগস্টই এটি চলে আসবে।
সেকেনভ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের দাবি অনুযায়ী, বিশ্বের যেসব দেশ ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম রাশিয়া। তারা বলছেন, রাশিয়া ছাড়া বিশ্বের অন্য কোনও দেশই এখনও পর্যন্ত করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সফলভাবে শেষ করার দাবি করতে পারেনি।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে এই ভ্যাকসিন তৈরি করেছে গামালেয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট।
শুক্রবার দেশটির উপ-স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওলেগ গ্রিডনেভ বলেন, সফলতার সাথে এই ভ্যাকসিন আনা সম্ভব হলে এটিই হবে বিশ্বের প্রথম করোনা ভ্যাকসিন।
আপাতত এই ভ্যাকসিনের তৃতীয় বা চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে। উপ-স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এই ভ্যাকসিন সবার আগে করোনা চিকিৎসার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ব্যক্তি ও বয়স্ক লোকদের দেওয়া হবে। মস্কোর তরফ থেকে পরিকল্পনা করা হয়েছে যে, আগামী অক্টোবরেই এই ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে। সে সময় একসঙ্গে অনেক মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গামালেয়া ভ্যাকসিনটি শর্তসাপেক্ষে আগস্ট মাসেই নথিভুক্ত করা হবে। অর্থাৎ এটিকে ব্যবহারের জন্য অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজও চলতে থাকবে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল যতদিন না সম্পূর্ণ হচ্ছে ততদিন এর ব্যবহার শুধু চিকিৎসকরাই নিয়ন্ত্রণ করবেন।
যদিও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ভ্যাকসিন বের করার ব্যাপারে তাড়াহুড়ো না করতে পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বলছেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং কার্যকরীতার ব্যাপারে নিশ্চিত না হয়ে কোনও ভ্যাকসিন ব্যবহারের জন্য অনুমোদন করা উচিত হবে না।
এর আগে রাশিয়ান ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের (আরডিআইএফ) প্রধান ক্রিমিল দিমিত্রিভ জানিয়েছিলেন যে রাশিয়াই বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে তাদের করোনা ভ্যাকসিন বাজারে আনবে। সেসময় তিনি বলেন, স্পুতনিক ১ এর মহাকাশ যাত্রা দেখে মার্কিনীরা যেভাবে অবাক হয়েছিল একই ঘটোনা ঘটবে করোনা ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও। বিশ্বপবাসী অবাক হয়েই রাশিয়ার সাফল্য দেখবে।