পূর্ব প্রতিবেশীর সাথে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনর্নবীকরণের লক্ষ্যে ভারত বাংলাদেশের কাছে ১০টি ব্রড গেজ লোকোমোটিভ ট্রেন হস্তান্তর করবে। এটি ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় নয়াদিল্লি কর্তৃক প্রতিশ্রুত একটি সহায়তা কর্মসূচীর অংশ।
সোমবার একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে লোকোমোটিভ ট্রেনগুলো হস্তান্তর করা হবে যেখানে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জাইশঙ্কর, রেলপথ মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এবং বাংলাদেশ থেকে স্ব স্ব সহযোগীরা অংশ নেবেন।
গত সপ্তাহে কলকাতা থেকে কন্টেইনার পণ্য পরিবহনের প্রথম জাহাজ বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে ত্রিপুরার আগরতলাতে পৌঁছেছে যা দুই দেশের মধ্যে সামুদ্রিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
একটি লাইন অফ ক্রেডিটে ভারত বাংলাদেশে ১৭টি রেল প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং রিপোর্ট অনুযায়ী, ইতিমধ্যে নয়টি সম্পন্ন হয়েছে। সম্পন্ন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে সিগন্যাল সরঞ্জাম, লোকোমোটিভ, ওয়াগন এবং রেল সেতু সরবরাহ।
আরো পড়ুনঃ এই প্রথম ভারত থেকে বাংলাদেশে সরাসরি পণ্যবাহী স্পেশাল ট্রেন চালাল ভারতীয় রেল
এশিয়ান খেলায় ‘চীন’-এর দৃষ্টিকোণ
ভারতের এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে আসে যখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তার বাংলাদেশী প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করে কাশ্মীরের কথা উল্লেখ করেন। কয়েকদিন আগে, ইমরান খান শেখ হাসিনাকে ইসলামাবাদ সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানান এবং মজার বিষয় হচ্ছে, টেলিফোন কথোপকথনের সময় তিনি হাসিনাকে জম্মু ও কাশ্মীরের কথা উল্লেখ করেন।
খান “একটি নিরাপদ এবং সমৃদ্ধ অঞ্চলের জন্য জম্মু ও কাশ্মীর বিবাদের শান্তিপূর্ণ সমাধানের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন” – অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস অফ পাকিস্তান রিপোর্ট করেছে।
জম্মু ও কাশ্মীরের উল্লেখ নয়াদিল্লির কূটনৈতিক ভ্রু কুঁচকে দিয়েছে এবং বিশ্বাস করা হয় যে প্রধানমন্ত্রী খান এবং শেখ হাসিনার মধ্যে এই আহ্বানের পিছনে চীনের হাত রয়েছে।
গালওয়ান সহিংসতা এবং পূর্ব লাদাখের লাইন অফ কন্ট্রোল বা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (LAC) বরাবর অচলাবস্থা নিয়ে নয়াদিল্লি ও বেইজিং-এর মধ্যে চলমান কূটনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এই উন্নয়ন দেখা যেতে পারে। এমন এক সময়ে যখন যুক্তরাষ্ট্র চীনের বিরুদ্ধে একটি পূর্ণাঙ্গ কূটনৈতিক যুদ্ধ করছে, এবং দেশটি ইতিমধ্যে হিউস্টনে চীনের কনস্যুলেট বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে এবং বিশ্বকে বেইজিং-এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে, অন্যদিকে চীনও সক্রিয়ভাবে প্রতিবেশী এবং মিত্রদের সাথে যোগাযোগ করছে।
যদিও দু’দেশের দাবি অনুসারে, পাকিস্তান বেইজিংয়ের ‘সর্ব-আবহাওয়া’ মিত্র হিসরবে রয়ে গেছে, তবে নেপালে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অশান্তি, যেখানে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর মন্তব্য করেছেন, তাদেরও চীনের সাথে সম্পর্ক আছে বলে মনে করা হচ্ছে।