চীন ও পাকিস্তান দুই দেশের সাথেই সীমান্ত বিরোধ রয়েছে ভারতের। সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা কাশ্মীর ইস্যু। বিতর্কিত অঞ্চল কাশ্মীরের অবকাঠামো উন্নয়নে চীন ও পাকিস্তান তাদের সহযোগিতার পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে। চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের অংশ কাশ্মীরে রেল যোগাযোগ উন্নয়নে ৬ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারের অনুমোদন দিয়েছে ইসলামাবাদ।
এছাড়া চীনের জিনজিয়ান প্রদেশের কাসগর থেকে ইসলামাবাদ পর্যন্ত বৃহত্তর সড়ক যোগাযোগের অংশ হিসেবে এ সপ্তাহেই ঠাকোট থেকে হেভেলিয়ান পর্যন্ত ১১৭ কিলোমিটারের রাস্তা খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে চীন। এই সড়কটি জম্মু ও কাশ্মীরে ভারতের দাবিকৃত অঞ্চলের পাশ দিয়েই তৈরি হয়েছে।
এদিকে এই সড়কটির নির্মাণকাজ শেষ হলে এমন এলাকা দিয়ে যাবে যা নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ উভয়ই নিজেদের বলে দাবি করে। ভারতের সাথে উভয় দেশের ঝামেলাপূর্ণ সময়ের মাঝেই সড়কটি খুলে দেওয়ার বিষয়টি চীন ও পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রমাণ দেয়।
চীনা সংবাদ মাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট এর এক প্রতিবেদনে চীনের সাংহাই মিউনিসিপ্যাল সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ ওয়াং ডেহুয়ার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, “চীন ও পাকিস্তানের প্রকল্পগুলো নিয়ে ভারত বেশ চিন্তিত। এই অঞ্চলের কৌশলগত অবস্থান যে গুরুত্বপূর্ণ, তা এই প্রকল্পটি দেখিয়ে দিচ্ছে।”
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গোটা কাশ্মীরকে নিজেদের মধ্যে অন্তভূর্ক্ত করে পাকিস্তানের নতুন রাজনৈতিক মানচিত্র প্রকাশ করেছিলেন। যেখানে ভারত অবৈধভাবে জম্মু ও কাশ্মীর দখল করছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পরবর্তীতে দিল্লি পাকিস্তানের সদ্যপ্রকাশিত এই মানচিত্র রাজনৈতিকভাবে অযৈাক্তিক বলে আখ্যায়িত করেছে।
আরো পড়ুন; ভারতের জেএন্ডকে, সিয়াচেন এবং জুনাগড় -কে অন্তুর্ভুক্ত করে পাকিস্তানের নয়া মানচিত্র প্রকাশ
ওদিকে কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা বাতিলের বর্ষপুর্তিতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বুধবার কাশ্মীর একপক্ষীয় কোনো পরিবর্তন অবৈধ ও অকার্যকর বলে মন্তব্য করেছে।
সীমান্ত নিয়ে বিরোধের জেরে জুনের মাঝামাঝিতে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চীনা সেনাদের সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা জওয়ান প্রাণ হারান। এছাড়া জম্মু কাশ্মীরে খন্ডযুদ্ধে ভারত ও পাকিস্তানের সৈন্য মারা গেছে।
সিঙ্গাপুরের এস রাজারত্ন স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো জেমস ডরসে বলেন, “সীমান্ত নিয়ে চীনের সঙ্গে ভারতের সাম্প্রতিক উত্তেজনার ফলে বেইজিং-ইসলামাবাদ সম্পর্ক আরও জোরালো অবস্থানে রয়েছে।”
এই পদক্ষেপ চীনের জন্য ভাল-মন্দ উভয় পরিণতি বয়ে আনতে পারে বলে মনে করেন তিনি। কেননা ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশেই চীনের বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে।