বৃহস্পতিবার ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (সিবিআই) সুশান্ত সিং রাজপুত মৃত্যু মামলায় একটি এফআইআর নথিভুক্ত করেছে। এজেন্সি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন বুধবার কেন্দ্রীয় প্রজ্ঞাপনের পরে বিহার সরকারের সুপারিশে মামলাটি এজেন্সিটির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পাটনার বিহার পুলিশ কর্তৃক নথিভুক্ত করা ফাইলের উপর ভিত্তি করেই এই এফআইআরটি করেছে সিবিআই। উক্ত এফআইআর-এ রিয়া চক্রবর্তী, তার পিতামাতা, তার ভাই শোইক এর নাম উল্লেখ করে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, আত্মহত্যার প্ররোচনা, অন্যায়ভাবে আটকে রাখা, চুরি, বিশ্বাসের লঙ্ঘন, প্রতারণা ও অপরাধমূলক হুমকি হিসেবে দায়ের করা হয়েছে।
সিবিআইয়ের এফআইআর বলছে, “২৫-০৭-২০২০ তারিখের এফআইআর নং ২৪১/০২/২০১০, অপরাধ সমূহ 341, 342, 380, 406, 420, 306, 506, 120 বি আইপিসি, পিএস- রাজীব নগর, জেলা-পাটনা বলিউড অভিনেতার মৃত্যুর সাথে সম্পর্কিত সুশান্ত সিং রাজপুতকে তদন্তের জন্য কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোতে স্থানান্তর করা হয়েছে।”
এর আগে সিবিআই বলেছিল যে তারা বিহার পুলিশের সাথে যোগাযোগ রাখছিল, যেখানে সুশান্ত সিং রাজপুতের বাবা সুশান্তের প্রাক্তন লিভ ইন পার্টনার রিয়া চক্রবর্তী এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রথমে এফআইআরটি নথিভুক্ত করেছিলেন।
সিবিআইয়ের এফআইআর আরও বলেছে, “সুতরাং নিয়মিত মামলা আন্ডার/সেকশন 341, 342, 380, 406, 420, 306, 506, 120B আইপিসি (১) রিয়া চক্রবর্তী এবং তার পরিবারের সদস্যদের (২) শ্রী ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী, (৩) শ্রীমতি। সন্ধ্যা চক্রবর্তী, (৪) শোয়িক চক্রবর্তী, (৫) এস স্যামুয়েল মিরান্ডা, এবং (৬) মিসেস শ্রুতি মোদী এবং অন্যরা।”
কর্মকর্তারা যোগ করেছেন যে সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্ত দল (এসআইটি) অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত মৃত্যু মামলার তদন্ত করবে, যারা বর্তমানে বিজয় মাল্যর বিরুদ্ধে আগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ড কেলেঙ্কারি এবং ব্যাংক জালিয়াতির মামলা তদন্ত করছে,
বিহারের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনসহ রাজনৈতিক কারণে এই মামলাটি সিবিআই-এর কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে বলে দাবি করে মহারাষ্ট্র সরকারের তীব্র বিরোধিতার মধ্যেই এই খবর উঠে এলো।
এদিকে মুম্বাইয়ে সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকে এই মামলায় বিহার সরকার বা পুলিশের কোনও লোকস স্ট্যান্ডি নেই বলে দাবি তুলেছে মহারাষ্ট্র।
তবে প্রভাবশালী লোকদের বাচাতে মুম্বাই পুলিশ কভার আপ করার চেষ্টা করছে দাবি বলে সুশান্তের বাবা এবং বিহার পুলিশের দাবি ওঠার পরেই সিবিআই এর কাছে এই মামলাটি হস্তান্তর করা হলো।
এর আগে সুশান্তের বাবা এবং বিহার পুলিশ দাবি করেছিল যে এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণাদি নষ্ট এবং ইচ্ছাকৃত ভাবে মামলাটিকে সরাতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অগ্রাহ্য করছে মুম্বাই পুলিশ।
তবে মহারাষ্ট্র সরকার এবং মুম্বাই পুলিশ উভয়েই শুরু থেকেই এই অভিযোগগুলি অস্বীকার করে আসছে।
১৪ ই জুন তার বান্দ্রার ফ্ল্যাটে সুশান্ত সিং রাজপুতের মরদেহ পাওয়ার পর থেকেই এই বিষয়টি খতিয়ে দেখছে মুম্বাই পুলিশ। তবে এখনও পর্যন্ত এই মামলায় কোনও এফআইআর নিবন্ধন করেনি তারা।
সুশান্তের মৃত্যুর মধ্য দিয়েই বলিউডের নেপোটিজম নিয়ে প্রথমবার বড় আকারে আলোচনা উঠে এসেছিল।
নেপোটিজমের সাথে সাথে আরেকটি তত্ত্ব উঠে আসে যা তাঁর প্রাক্তন বান্ধবী এবং লিভ-ইন পার্টনার রিয়া চক্রবর্তী কর্তৃক অর্থ আত্মসাৎ ও হয়রানি সুশান্তকে আত্মহত্যা করতে প্ররোচিত করেছিল বলে অভিযোগ করে সুশান্তর পরিবার।
এদিকে সিবিআইয়ের করা মামলার কেন্দ্রবিন্দুতে রিয়া চক্রবর্তী থাকছে বলেই মনে করা হচ্ছে যেহেতু সংস্থাটি বিহারে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটিই গ্রহণ করেছে সংস্থাটি।