করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে সৃষ্ট চলমান সংকটের পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে ১.৩ কোটি নাগরিক চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন। বিশেষ করে অস্থায়ী কিংবা খন্ডকালীন কর্মসংস্থানের সাথে নিয়োজিত নাগরিকরা এই ঝুঁকিতে পড়েছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আজ বৃহস্পতিবার (১৮ই জুন) ‘এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্ম, বাংলাদেশ’ এর আয়োজনে “এসডিজির নতুন চ্যালেঞ্জ ও বাজেট ২০২০-২১” শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংলাপে এই আশংকা প্রকাশ করেছেন সংলাপে অংশ নেওয়া বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলছেন, ২০১৬-১৭ শ্রমশক্তি জরিপের তথ্য বিশ্লেষণ করে ও তা পর্যালোচনার পর এই আশংকা করা হচ্ছে। বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় নিলে কর্ম হারানোর ঝুঁকিতে থাকা নাগরিকের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।
এসডিজির এই ভার্চুয়াল সংলাপে ‘এসডিজি প্লাটফর্ম’ এর আহবায়ক এবং সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মূল প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন।
সংলাপের সভাপতিত্ব করেন এসডিজি প্লাটফর্মের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান।
চলমান করোনাভাইরাস মহামারি সংকটে নারী, শিশু, বয়স্ক জনগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী, আদিবাসী, প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত জনগোষ্ঠী, যুব সমাজ সহ সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ নিয়েও সংলাপে আলোচনা করা হয়।
সংলাপে বক্তারা বলেন, একটি বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে পর্যায়ক্রমিক পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে চলমান এই সংকট থেকে মুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা জরুরী।
মহামারির কারণে সৃষ্ট নতুন চ্যালেঞ্জ সমুহ মোকাবেলায় দেশের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এসডিজি কাঠামোকে বিশেষ ভাবে সন্নিবদ্ধ করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে দেশের পিছিয়ে পড়া ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সহযোগিতার আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া জরুরী।
ওদিকে সংলাপে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ বিভাগের সদস্য সিনিয়র সচিব বলেন, “চলমান অতি মহামারি থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে সরকার একটি স্বল্পমেয়াদী কার্যক্রম হাতে নেবে।”
অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা সহ সকল উন্নয়ন কার্যক্রমেই সরকার দেশের ঝুঁকিতে থাকা সকল নাগরিকদের সহযোগিতা প্রদানের বিষয়টি বিবেচনায় রাখবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এই সংলাপে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, সুনামগঞ্জ, বরগুনা, বগুড়া সহ দেশের নানান জায়গা থেকে উন্নয়ন কর্মী, বিশেষজ্ঞ, অর্থনীতিবিদ, গবেষক, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, যুব প্রতিনিধি এবং সাংবাদিকগণ অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ২৬শে মার্চ থেকেই বাংলাদেশে সাধারণ ছুটি শুরু হয়। পরবর্তীতে ছয় বারের মত বাড়িয়ে এই সাধারণ ছুটি শেষ হয় ৩০শে মে। এরপর ৩১শে মে থেকে সীমিত পরিসরে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।